ঘড়িতে সময়

Saturday, March 30, 2013

অসহায় অতীত- শুভ অপরাহ্ন



আমরা তেমনই অসহায় নিকট দূরের অতীত হাতড়ানো
বোকা মানবতা-
যেভাবে পালকহীন রাগ-অনুরাগ, বসন্তের আমেজ
নিঃশ্বেস হতে চলা স্বর্গভূমি,
আয়ু-বর্ধক চেতনায় মৃত বালাই।
রোগ মুক্তির শৈশবে যা ছিলো পেছনে, তাতে -
দূর্বার গতিতে তেড়ে আসা ট্রাকের পোঁ পোঁ আওয়াজ,
কানে বাজে।
অস্বস্তিকর, প্রাণনাশক অনুভূতি।
বারবার স্বপ্ন প্রিয়ার আঁচল কেটে নৌকা বানানো
শৈশব আমার, তুচ্ছ সবকিছুই।
আষাঢ়ের ঝুম জলরাশিতে পা পিছলে চেতনা রোধে
থমকে দাঁঢ়ানো বর্তমান।
কই পুকুরের জ্যান্ত তেলাপিয়া তো তেলে ভাজা হয়ে
সুগন্ধী চালে পরিবেশিত হয় না আজকাল!
মুক্তির নেশায় ছটফটানো হাত তোলা সার্জেন্ট
থামিয়ে দিলে -
কি ভাবে চেয়ে দেখবো দূর অতীতের সব ভালোলাগা!
কি ভাবে চেয়ে থাকবো স্মৃতির গভীরে শাড়ীর আঁচলে?
বদলানো যায়না বলেই হেঁটে চলেছি মাথা অবনত করে।

[রচনাকালঃ ৩০ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ দুপুর ১:৩৭ মিনিট।]

Friday, March 29, 2013

ব্লগের নামকরণঃ মৎস্য-কুমারী বা পূর্ণিমা বা তুমি



আমার ব্লগের একটা নাম দেবো। কবিতা না। কোন রঙচঙা বইয়ের নামকরণও না। একটা নাম ঠিক করতে হবে এই মুহূর্তে। আমার প্রতিচ্ছবির ভাব মূর্তির জন্য। ছোট-খাটো কোন পুরুষ বৃক্ষ বা কোন নারী লতা’র কাছেই এমন জিজ্ঞাসা থাকবে। কি নাম রাখবো আমার পুকুরের। যে পুকুরে শ্যাওলা জুড়ে ছায়ার তলে বাস করে এক মৎস্য-কুমারী। সারাবেলা বসে থাকি তাকে দেখবো বলে। এমনকি জন্ম থেকে আজও অপেক্ষারত দুটি শাপলা কুমারী এখনও সঙ্গী হয় আমার। দিন যতো কাটে ততোই প্রেম গাঢ় হবে বলে ধারণা পা তোলা ডাহুকের আর পাখা ঝাপটানো বক পাখীর। সেও আসে মাঝ রাতে বা আঁধার পথে। কখনো কখনো সাঁঝের আঁধারে সংগীতে উন্মাদনা জোগান দেয় রাতের পোকামাকড়ের দল।

এক, দুই বা তিন বলেই যদি চোখ খুলে দেখি তাকে! কি আশ্চর্য এমন যদি হতো। এক পূর্ণিমা রাতে সেই শাপলা খোঁপায় এঁটে মৎস্য-কুমারী হাত ধরে যদি বলে, ‘চলো যাবে দূরের দেশে, জলে ভেসে। সাঁতরে নেবো মানবহীন শূন্য কোলাহলে, এক ঝাঁক রঙিন সুস্থ প্রজাপতী আর জল-ডাঙার পৃথিবীতে।’ আজও বসে অপেক্ষার পালা সেই পূর্ণিমার চলে যাবার প্রাক্কালে। কই এলো না-তো আমার প্রিয় পথ-ভোলা স্বপ্ন কুমারী। ভাগ্য প্রতিমা যখন সহায় হনই না বা মুখ ফিরিয়ে নেন অযথাই; বসে অপেক্ষা ছাড়া কি-ই বা করতে পারি আমি।

আরে ঐ তো মৎস্য-কুমারী। জলের ধারে, আধো উন্মুক্ত বুকে আঁচল সরিয়ে দুলে দুলে হাসছে আর আসছে আমার দিকে। কোন যুবকের প্রতি এমন আসক্তি তার? আমি তো? নাহ্। আমি না নিশ্চয়ই। হবে কোন ভাগ্যবান পাখীর মালিক। বউ কথা কও, ফিঙ্গে বা মাছরাঙা শিকারী’র। তারই কাছে ফিরছে হয়তো মৎস্য-কুমারী। আমার চেয়ে দেখা খসে পড়া দু’টি তারা যেন দূরে সরে গেলো বাঁশ বাগানের মাথার ওপর দিয়ে। আমি নিরানব্বই পড়ে ফেলেছি, কয়েক হাজার, কয়েক লক্ষ, কয়েক কোটি’র শেষের নিরানব্বই।

সাপ্তাহিক ছুটি বা কোন কার্যদিবসে যদি চোখ খুলে দেখি সে এসেছে। মায়ার দৃষ্টিতে চেয়ে আছে দৃষ্টি সীমার সমতলে, এই দিকে। হাত ধরে কি বলবে, ‘কেমন আছো তুমি? ভালো আছো তো?’

সেই আঠাশ বছর আগের এক ছুটির দিন। দিনটা ছিলো রবিবার। সাপ্তাহিক ছুটির খোলা দিবস। ছেলেবেলার সেই পুরনো ঝাপসা কথা। ডায়েরীর পাতায় ধূলোবালি মাখা সংক্ষিপ্ত পরিচয়ের ছবি। পূর্ণিমা’র সেই চলে যাবার মুহূর্তে এক কিশোরের চমকে ওঠা। সে একটু থেমে আমাকে বললো... মাথা নীচু করে, ‘আমাকে কিছু বলবেন?’ ‘না, মানে বলবো না।’ সেই পালিয়ে আসার পরে পার হলো গোটা দু’যুগেরও বেশী। সেই পূর্ণিমা চলমান, আজও আমাকে ঘিরে আছে। দু’হাতে কিছু প্রশ্ন লেখা ছিলো, এখনও সেসব মনের আবরণ চিবিয়ে খায় বলে খামোখাই নিজের চুল ছিঁড়ি। নিজের অস্তিত্ব নিয়ে খেলা করি। ভাষা খুঁড়ি। পরিণত যুবকটি যখন সংক্ষিপ্ত পূর্ণিমা’কে না বলেছিলো, পরিণতি জেনেই বলেছিলো। সেই আলোকজ্জ্বল পবিত্র প্রেমকে পূর্ণতা দিতে যে যোগ্যতা চাই তা তো ছিলো না যুবকের। তখনই ভুলতে চলা মন হারিয়ে ফেলেছে চাঁদের মুখ। আঁধার অমাবস্যায় জীবন সাজাতে দৃঢ় প্রতীজ্ঞ বলেই সেদিনের ‘না’।

সেই কিশোর থেকে পরিণত যৌবনে পদার্পণ করা পূর্ণিমা’র তখনই এক যুগ অপেক্ষার পালা ক্ষয়ে গেছে। সে নিশ্চয়ই গুণে ফেলেছে ততোক্ষণে কয়েক কোটি নিরানব্বই.. চোখ বন্ধ রেখে। আমার খোঁজে। হতাশ করে নিজেকে.. পালিয়ে ছিলাম। শুধু একটি দর্শণে নয়, একটি বিজ্ঞানের কোন পাতার যৌথ পড়ালেখায় কখনও ভালোবাসা হয়? জানতে পারিনি আজও। কিন্তু আজ যা জেনেছি তা হলো সেই অপারগতা আমাকে নরকে নিয়ে গেছে। আমি আজ মিথ্যা প্রতীক্ষার দিন গুণি বসে বসে। কাগজের কালিতে শূণ্যতা আঁকি। বেদনার কথা লিখি  ব্লগে, কবিতা বা গল্পের মাঝে।

তুমি গল্পের কথা শুনে মনে করতে যেও না আমি নিরানব্বই ভাগ সত্যি বলছি। হা...হা...হা... আমি এক শতাংশও মিথ্যা বলছি না। এই তোমাকে ছুঁয়ে বলছি। সেই কিশোর বা যুবকের সাথে চাঁদমুখের প্রেমের কথা.. মোটেও মিথ্যা না সেসব। ওসব পানসে কথা, লেখার মতোই বৈশিষ্ট্যহীন সাদা পাতা। পাতা বাড়ানোর জন্য এমন প্রলাপ কেন হবে! কেন হবে পূর্ণিমার সাত সতেরো...! আমি বসে আছি পুকুর পাড়ে। সেই পুকুরটায়। যেখানে আঁধার ছিলো, নির্জনতা ছিলো, দূর আকাশের তারার পলায়ন ছিলো। চোখ বুঁজে সেই গূণতে থাকা.. এক.. দুই... করে কোটির ঘরে। তারপর.. নিরানব্বই... আবার অপেক্ষা, আবার মনে মনে কতো কথা.. ভাবতে থাকা। কই মৎস্য-কুমারী যে এলো না! বসন্ত পেরিয়ে গৃহস্থের বুকে শুষ্কতা এলে সেচে কি জল আসে? আসে শুধুই উষ্ণতা, উত্তাপ, প্রখরতা। দিন চাই না যে এমন বেরসিক... বুক পোড়ানো, চির-ধরানো! পোড়ামাটিতে শুকিয়ে যাওয়া পুকুরে মৎস্য-কুমারী যে বাঁচবে না। আমার অপেক্ষার শেষ চাই। চাই না সামনের চৈত্রে শুকনো ভবিষ্যৎ! কোন রাজার লোক, সৈন্য-শাষক, চোর-ডাকাত কেউ ছদ্মবেশে... কেউ যদি ভুলিয়ে নেয়! কেউ যদি তাকে উঠিয়ে নেয়! সাগর তীরে চৌবাচ্চা খুঁড়ে কেউ যদি তাকে সাজিয়ে নেয়! কি হবে আমার ভাগ্য গণনার? কি হবে এতো প্রতীক্ষার? এক, দুই, তিন করে নিরানব্বই তারপর লক্ষ-কোটি গুণতে থাকার? আমি তবে জল হবো।

এই দেখো প্রশান্ত বা আটলান্টিক মহাসাগরের নীলে নীল চারিদিক। এক মৎস্য-কুমারী’কে পাবার আশায় কষ্ট বেলা আঁধার পেরিয়ে দু’খন্ড তারার বিচ্যুতিতে সময় গড়ানো ভীত আমি... চৈত্রকে দূরে ঠেলে সাগর সেজেছি। কি বিশাল বুকে উত্তাপের প্রখরতা ধারণ করে চলেছি। মৎস্য-কুমারী খেলে যায় আমার বুকের ওপর দিয়ে। বেলা ভূমিতে চাঁদ এসে পূর্ণিমায় হাসছে আর আমার চিত্তে প্রচ্ছন্ন বিনোদনে ভালোবাসছে দিগন্তে ওড়া সব পাখীরাও। মালিকানা যে যার থাকুক না কেন, আজ জলের তলে বা উর্দ্ধ চোয়ালে যা দেখা যায় তার সবই আমার। স্বপ্ন চুরির খেলাতে অপেক্ষাকে চুরি করেছি বলেই চোখের জলে সাগর আমার। তাতেই সবার উচ্ছাস আর আবেগ। ব্লগের নামটি বলো না কি দেবো?

[রচনাকালঃ ২৯ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত: ৯:০৯ মিনিট।]

মন - পাখী



সকালে ছিলো মুখে হাসি, দুপুরে ঘন মেঘে
আচ্ছন্ন;
বিকেলে ছিলো প্রফুল্ল মন, সাঁঝের আঁধারে
বিষন্ন।
রাতে কাঁদে বুক, মরন অন্ধ অনিদ্রার প্রহর
প্রসন্ন।
মাঝ রাতে পাখী এলে স্বপনে, হৃদয়ে সুখ
আসন্ন।

[রচনাকালঃ ২৯ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ বেলা ১১:৩৭ মিনিট]

Thursday, March 28, 2013

বাংলাদেশ - বাংলাদেশ



ভগবান... ঈশ্বর...... আল্লাহ্..
ডাক ওয়ার্থ-লুইস এ জিতাও ওদের
জিতাও বঙ্গকে...
ভঙ্গ করো লংকার ডংকা নিশান।
ছিনিয়ে আনো বিজয়
আর একটা জয়, বর্ণিল বিজয়,
তোমরা -
উড়াও বঙ্গের লাল-সবুজ চিহ্ন দূর্জয়।
দূর্বার গতিতে
এক একটা করে ছক্কা-চার মেরে
হারাও ওদের
দেখাও ওদের
বলো ওদের
জানাও ওদের -
বাঙালী বীরের জাতি।
ভয় করে না,
পিছে ফেরে না;
সম্মুখে ছোটা অগ্নি গোলক যেন উল্কা,
বিদ্ধংসী গ্রেনেড বা কামানের গোলা।
আমরা -
সংগ্রাম আর লড়াই করে টিকে থাকা প্রাণ।
ব্যাঘ্র হুংকার আর গর্জনে বলে দাও পৃখিবীকে -
ক্রিকেট এখন আমাদের খেলা,
দিলশান-মালিঙ্গা তোমরা সরে দাঁড়াও পথ থেকে।
ব্যাট - বল হাতে আমরা বিশ্ব জয় করবোই এবার।

[রচনাকালঃ ২৮ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:৪২ মিনিট।]

Wednesday, March 27, 2013

জট



নিস্তব্ধতার প্রতীকি প্রাণে
রঙিন আড়ম্বরে তক্কে জড়ানো উস্কখুষ্ক চুলের মস্তিস্কে তুফান জট,
সিল্ক এবং টানটান লম্বা কেশে বাঁক খাওয়া অসংখ্য গিট্টু
জমাট বেঁধেছে বিস্তর, বুদ্ধিতে সংকীর্ণমনা ধুধু বালুচর
মাইলেরর পর মাইল যেন বিদীর্ণ বুকের পাঁজড়ে
ভালোবাসা নামক পেরেক ঠুকে
অকাল লীলাভূমি;
ছন্নছাড়া-হতচ্ছাড়া লেজ গুটিয়ে নিবেদিত প্রেমে অপারগ তুমি।
শুকনো বসন্তে
দারুচিনি দীপে
আমার নিরব আরব ছায়ার প্রতি অশভ্য অকস্যাৎ বাক্যচ্ছেদে
হড়কে নিচে নামা পদদলিত সুখ।
কি লাভ হলো নিবেদনে?
তুমি এড়িয়ে গেলে!
যুক্তি খন্ডনে এবার তুমি এগিয়ে গেলে।
ভগবানের উষ্ণ আশীর্বাদে
ভক্তকূল বব ডিলানের শ্বাস - প্রশ্বাসের যেমনটি কদর দিয়েছিলো
উন্নত শপথের নানা উন্মাদনায় নানা বিপদ জেনেও
ঢাক কুড় কুড় বাদ্য তালে
দেশ জনতা ভোল পাল্টে যেমনটি বলেছিলো নানা কথা।
মস্তিস্কে জট পাকিয়ে কুড়াল হাতে টবের বৃক্ষ কাটলে
বনরক্ষা কর্মী কি কি আইনে শাসন করতো -
জানি না বা জানতেও চাই না।

বিষম খেয়ে বুদ্ধি হারিয়ে মাইনাস হওয়া হিম মগজে
তুমি আবারো এলে উষ্ণতা ভর করবে বুকে ঠিকই।
তারপর......
না পাবার বেদনায় -
আমি কাঁদবো, ছট-ফটাবো আর জট পাকাবো চুলে।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তুমি টবের বৃক্ষে প্রেম ছিটিয়ে দিবে,
নিস্তব্ধ প্রাণহীণ দূর দৃষ্টিতে অপলক আমি তাকিয়ে দেখবো।

[রচনাকালঃ ২৭ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ বিকাল ৪:৫০ মিনিট।]

Tuesday, March 26, 2013

এস.এম.এস (sms)


একটা এস.এম.এস মুঠোফোনে, তাতেই অনুভূতি প্রকাশ পায়;
দূরের চেনা-অচেনা মানুষ আচমকা এসে সামনে দাঁড়ায়।
এক বোতামে দিগন্তে উড়ে চলা পাখী,
নজড় কাড়া রঙিন ক্যানভাসে টেক্সট আলাপনে -
ক্ষানিক চুপ থাকি, অতঃপর আবারো বলতে থাকি।

কেমন আছিস?
হুম.. ভালো... তুই?
এইতো.. চলছে..।

অনুভূতির প্রকাশ যন্ত্রটা খোলা তলোয়ারের মতো বেশ তীক্ষ্ণ,
দিন-রাত খেলা করে হৃদয়ের শূণ্যস্থানে সর্ব অবস্থানে।
নকিয়া, স্যামসং, সিমফনি অথবা আই ফোনে,
ফেসবুক, টুইটার, গুগল বা আমার ব্লগে আপ করা
পঁচে যাওয়া দূর্গন্ধময় কবিতার পাতায়
চোখ রাখা পাখী ডাকে অচেনা সুরে -
কানে কানে
মনে মনে
প্রাণে প্রাণে
আনমনে,আর রহস্যময় হৃদয়ের টানে।
শুনতে পাওয়া চেনা সেই স্বর, প্রিয় ডাক।

কেন করিস এমন পাগলামু?
জানি না তো! কথা বলবি? আসবি আজ?
তুই কষ্ট পাবি। না যাবো না তোর কাছে। তুই যা চাস তা তো আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব না।
কি চাই আমি?
ভালো থাকিস রে...।

কি চাই আমি! জানতে চাই নি কখনও নিজের কাছেও।
কি চাই আমি?
মুঠোফোনটা ছুঁড়ে ফেলে এক রাশ ক্ষোভ আর অভিমানে
জ্বলতে থাকা আমি।
দিয়াশলাই আর আগুন জ্বালা এস.এম.এস গুলো
ডিলেট.. ডিলেট এবং ডিলেট।
প্রেম কবিতার পান্ডুলিপি পুড়তে থাকার শব্দ ভেসে আসে।
পোড়া গন্ধে চারদিক ছেয়ে যায়।
সুন্দর কোমল অনুভূতিগুলো পুড়ে ছাই হওয়া ধ্বংস বিশেষ।
বাকরুদ্ধ শ্রোতার মতোই মুঠোফোনে
অনুভূতির অনুসন্ধান করতে থাকি আবারো এবং আবারো।
এয়ারটেল, রবি বা গ্রামীনের সিগন্যালে দাঁড়ানো
অপূর্ণ বাণীর অসম্পূর্ণ এক বখাটে উশৃঙ্খল শহুরে যুবক আমি -
কারো এস.এম.এস এর অপেক্ষায় বসে আছি..।

[রচনাকালঃ ২৬ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৮:৩২ মিনিট।]

Monday, March 25, 2013

পাগল প্রলাপঃ শালার স্বাধীনতা


এহ্ টাকা দিয়ে শাহবাগ বানায়সো, ট্রাফিক জ্যাম বুঝো কেমন লাগে?
এহ্ জয় বাংলা?
এহ্ বাঙালীর বাচ্চা!
এ্র্যাটেনশান।
একটা কড়া করে স্যালুট। মতিঝিলের ব্যস্ত সড়কগুলোতে প্রায়ই দেখা যায় তাকে।
কালিমাখা জুতো, অফিসের পোষাক, বাঁকা টাই, একটা হ্যাট আর
হঠাৎ চিৎকারে মলিন হাসিতে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়ানো এক ব্যক্তিত্ব।
ছেলে-ছোকরা’রা বলে পাগল!
আমি জানি সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। সমাজের গ্যাড়াকলে পড়ে এমন বাউন্ডুলে!
হা হা হা। শালার মুজিব দেশ স্বাধীন করসে? তোগো মুজিব?
পাকিস্তানের জেলে পোলাও আর মুরগীর রান খাইসে।
যুদ্ধ করসি আমি। আমি। পলাশীর নবাব। মাওলানা ভাসানি।
জিয়ারে কয় চুর। ওয়াক থু। মুক্তিযোদ্ধারে কয় রাজাকার।
শুয়োরের বাচ্চা। একদম গুল্লি করুম। ঠা.. ঠা... ঠা...।
মু্ক্তিযোদ্ধা আইসে পালা... পালা... মুক্তি আইসে.. শাহাবাগ দখল করসে হাসিনা।
হা হা হা।
এ্র্যাটেনশান। কড়া করে এক জাত কর্ণেলের মতোই স্যালুট মারলো আমাকে।
একটা জাতি কতো অভাগা হলে এমন জীবন্ত মুক্তিযোদ্ধা’র জেগে থাকা চলে।
মুখে এমন সব এলো-মেলো বক্তৃতা দিয়ে যায় যে লজ্জায় মাথা হেট!
একটা সেন্সরহীন দৈনিক বার্তার খোঁজে বের হই প্রায় দিনই খুঁজতে তাকে।
একজন মুক্তি, নির্ভিক যোদ্ধা জীবন জীবিকায় পরাজিত সৈনিক সে;
নানা নীপিড়নের নীল কৌশল আর ব্যাঙ্গ করে যাওয়া তার দ্ব্যার্থহীন ভাষা।
দেশকে ভাগ নয় জোড়া লাগানোর কৌশলে ব্যস্ত নাগরিক তুমি... কি বলবে?
মুক্তিযোদ্ধার গালি শুনতে ভালই লাগে, কি বলো?
রোজকারের না পাওয়াগুলো এতো অশান্ত আজকাল ভালো লাগে না বকতে।
পাগল বলবে তো তুমি! বলো। আমি খুশী।
এ্র্যাটেনশান।একটা কড়া করে স্যালুট। নব প্রজন্মের পাগল যোদ্ধাদের গুণতে ভুলো না।

[রচনাকালঃ ২৫ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:৪৬ মিনিট।]

শিউলি আর ক্যাকটাস



রক্ত চিহ্ন না থাকলেও তিনি বলেছেন অশুভ চাননি কথনও,
পাড়া-মহল্লার বন্ধু যতো ছিলো কাউকে বলেননি -
আমার পরম শুভাকাঙ্খি শিউলি উনি।
ক্যাকটাসের পরিচয় হলেও সাজাতে জানি বাহারি,
তাই মরুর বুকে, উত্তাপে একটু শোভা ছড়ানো।
পথ হারা পথিকের, স্বজন হারা সাথিদের
আপন ভাবতে চাই, কিন্তু ক্যাকটাসের ব্যথা যে
গান শোনানো ককিলের মতো কাঙ্খিত মধুর ছিলো না।
শিউলি বললেন -
ক্যাকটাস তুমি ভয়েরও নয়, ক্ষয়েরও নয়;
তুমি দূর হতে দেখা নগরীর ক্লান্ত ভ্রমনের নিদারুন বৈচিত্র মাত্র।
তোমাকে কাছে নেবো বলেই তুলে নিলাম আপনে।
কেউ বলুক আর না-ই জানুক আমরা বন্ধু এবং বন্ধু।

[রচনাকালঃ ২৫ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ সকাল ১০:০৬ মিনিট।]

Sunday, March 24, 2013

কবিকে ভালোবাসলে, আমাকে নয়!



স্বার্থপরের মতো বলেছিলাম, চলে যাও।
দরজার ওপারে সরে গিয়েও গেলে না হারিয়ে।
আমিও এপারে অপেক্ষায় কতো না রাত কাটিয়েছি,
মন কে বলেছি - এই যে, এইবার এলো বুঝি!
এই তো এলো। ভেবে অবাক হবে,
তুমি যখন কড়া নাড়লে, আমিও যে সাড়া দিলাম।
দু’হাত প্রসারিত করে তুলে নিতে চাইলাম বুকে।
জানি তুমি গোলক পৃথিবীকে ভালোবেসেছো,
এবং -
তুমি ভালোবেসেছো কবিকে এবং কবিতাকে।
আমাকে নয়। মানে এই নষ্ট আত্মার মানুষকে নয়!
তুমি উপলব্ধি করেই সরিয়ে নিলে নিজেকে, সরিয়ে নিলে বুক থেকে।
আমার কবিতার বইটি তোমার বুকে আজও শোভা পায়,
আর আমি কাটাই ভুতুড়ে নিশ্চুপ পোকা-মাকড়ের আস্তানায় -;
আঁধার কালো ঘুট-ঘুটে অন্ধকারে, চারুলতার ভাবনার চকিতে।
তোমকে নিয়ে ভাবতে বসে কলম তুলে অনন্তকাল ধরে
লিখে যাই এক তেপান্তরের কাহিনী। এক প্রেমের কাহিনী।
কবির আড়ালের মানুষটাকে ভালোবাসতে এতো দ্বিধা তোমার!
এতো সংকোচে অশ্রু ঝরে ঐ প্রিয় চোখ দু’টি থেকে!
মিষ্টি গাল বেয়ে ঐ লোনা জল আমার কষ্টকে পবিত্র করে প্রতিবার।
কারন আমি যে শোকে পাথর কবি।
এক ধ্যানে কবিতা লিখি একাকিত্বে।
বলেছিলাম -
যদি নাই বা বাসো ভালো, ক্ষতি কি! কবি’কে তো ভালোবাসো!
কবিতার পাতাতেই না হয় বাসর গড়বো আমরা আগামীতে।

[রচনাকালঃ ২৪ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:৪৩ মিনিট।]

নৈশভোজে দাওয়াত তোমাদের




কিছু মনে করো না, খাবারের একটা গল্প ছিলো জানা ‘ভুলে গেছি’।
শোনাবো ভেবেছিলাম, কিন্তু.... যাই হোক;
একটা খাবারের তালিকা প্রস্তুত করবো বলে ঢুকে ছিলাম
রন্ধনশালায়।
চিংড়ী, কচুর লতি, শুটকি ভর্তা আর ডালে আমার বেশ লোভ;
ভেবেছিলাম এমনই কিছু করবো। কিন্তু....।
তারপরও-
একটু মাথা চুলকিয়ে ভেবে নেয়া ডিফারেন্ট কিছু করা যায় কি না -
তেল, ঘি, গরম মশলার ডিব্বায় ভরপুর সব কানায়-কানায়,
মাংসের কথা ভাবতেই ফ্রিজ খুললাম,
বড়ো সাইজের রাজ হাঁস, পাতি হাঁস, কবুতর, গরু/খাঁসি আস্ত ঠাসা ঠাসি।
গরুর মাংসের মধ্যে ঝাল কসা, পুদিনাপাতা, পেপে দিয়ে হাল্কা ঝোল,
অথবা আলুর ঝোলের রেসিপিই আমার পছন্দ।
মাছ খাবো না আজ।
তবুও, ইলিশের দো-পেঁয়াজা, ভাজা দু’পিস পেটি বা গাদা সাথে
ঝাল পাতোড়া ডাল। দারুন খেতে।
কি করি? কি করি?
ইলিশের ডিম ভুনা সাথে নাড়ীর স্পেশাল ভাজা.. সব রাঁধবো আজ।
পোলাও - কোরমা, খাঁসির রেজালা, মুরগীর রোস্ট, কাবাব নাহ্
সাথে বিরিয়ানীও থাকবে। ফিরনী আর ফলের ডালি থেকে
তুমি সব ফলের টুকরো আর রস পাবে ফ্রুটস ফিরনির ডেজার্টে।
চলে এসো আজ রাতে কে কে খাবে।
উন্মুক্ত আমার ভোজ সভায় দাওয়াত তোমাদের সবাইকে।

[রচনাকালঃ ২৪ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ বিকাল ৫:০২ মিনিট।]

Saturday, March 23, 2013

বিদায় নেতা জিল্লুর



ক্ষুদে গড়নের জিল্লুরের চির-বিদায়, মুখ ফেরাতে চেয়েছিলাম পাষাণ হয়ে।
ভেবেছিলাম ঐ একই শত্রুর গোত্র মানব বলে কথা!
চরিত্র কি একই ঘরে থেকে বদলায়?
লগি-বৈঠা’র ব্যানারে মুভি দেখবো না ঠিক করেছি আর কখনোই!
কিন্তু প্রত্যুসে ঘুম ভাঙলো যখন, ভাবলাম লিখি না তার ইতি নিয়ে।
আমি স্বাধীনতা দেখিনি, শুনেছি মুক্তিতে ক’জনের নেতৃত্ব দান।
বেশ লড়েছিলেন নেতৃত্বে, জাগরণের সংগীতে জাগিয়ে তুলেছিলেন
জাতিকে ঐক্যবদ্ধের খাতিরে ।
আমি ওপর থেকে দেখেছিলাম রক্ত সম্পর্কের যারা ছিলেন সর্বত্র
সবাই লড়লেন মুক্তির লড়াইয়ে -
এক স্বাধীন মানচিত্রের জন্য, ভূখণ্ডের জন্য, এক পতাকার জন্য।
সেদিন কোন বিবেধ ছিলো না জাতি তত্বে, হিংসা ছিলো না কোন মঞ্চে!
আমার মুক্তির কারণেই কুর্ণিশ জিল্লুর তোমাকে হাজার-লক্ষ-কোটি বার।
যে অবদান তার ঐক্যের যুক্তিতে, আমি মুক্তকন্ঠে দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই -
ভিন্ন মতের আমি, যে যাই বলে ডাকুক;
জিল্লুর রহমান তুমি আমার নেতা, কোটি সালাম রইলো তোমার প্রতি।

[রচনাকালঃ ২৩ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ দুপুর ১:২৮ মিনিট।]

Friday, March 22, 2013

প্রাইভেট শিক্ষক



তার কাছ থেকে পায়ু মৈথুনে রক্ত বের করাই শিক্ষকের দায়িত্ব,
শিক্ষক চুমু খেয়ে বললেন, তোমাকে উপর হয়ে শুয়ে নিতে হবে সব যৌণ তত্ব।
নোট এর আশায় ছাত্রী পড়লো এবার বিপাকে।
আপত্তি তাতে ভীষণ বলবে কাকে? কিভাবে বলবে তাকে?
শিক্ষক বললেন, রক্ত যে ভীষণ চাই, নয়তো তোমার হবে ফেল।
ছাত্রী বললেন - বেল তলায় বেল ফাটাতে চাই না; তেল চাই না, চাই না জেল।
কিসের এমন গৌণ কর্মে যৌণ ভিত্তি?
ভঙ্গুর তোমার অগোছালো মন, চাই না কোন অঙ্গুর মাপার নিক্তি।
রক্ত দেবো না। দেবো না এবং দেবো না।
‘শিক্ষক’,
সোজা পথে দিন না সাজেশন, গাইড বা নোটে পাশ করতে বলেছেন সরল অভিভাবক।
কেন পেছন পানে চাওয়া। আমি যে ভীতু, অনভিজ্ঞতায় সরু রাস্তা ঘাট সাজানো ব্যাপক।
দায়িত্ব তো আমাদেরও ছুটির দিনে ঘর ছেড়ে উলু বনে মুক্তা ছড়ানো !
প্রিয় খেলায় গ্রীষ্ম, বসন্ত বা উৎসবে সাজা মধুর নবান্ন।
প্রেমের পশরায় দায়িত্ববোধ আছে তাতে যেন হোক রক্তপাত।
কিন্তু পাশ করাতে শিক্ষক তোমার উত্তেজনায় ব্যভিচারে ছাত্রী আমি কুপোকাত।
রঙের মাঝে বর্শা ছোড়া অনুভূতির নিঃশব্দে পালানো হবে ক্ষতিকর।
কেনই বা ছাত্রী হবে পর। বলবে শিক্ষক, কেন ছাত্রির ‍ভীরু বুকে ভর?
তারপরও শিক্ষকের নেতিয়ে পড়া শঙ্কা ভরা লিঙ্গে আগুন,
ছাত্রি বলে - শিখতে চাই না জ্ঞানের আঁধার পায়ু পথে প্রাইভেট বেগুন।

[রচনাকালঃ ২২ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ দুপুর ১২:০৯ মিনিট।]

Thursday, March 21, 2013

দুই নেত্রী’র বিয়োগ বেলায়


ধরে নাও জাতীর ললাটে আরো এক ছুটি এলো, জমদূত নয়া মৃত্যুর এক দাওয়াত দিলো;
বিদায় নিলো দুই মহারথী,
দুই বিধবা -
এক, পুঁথি আর দুই, যুথী।

এক জন- বঙ্গ রাণী দাঁত চিবিয়ে পা উঁচিয়ে স্বপ্ন জালে রাজ্য চালান, ঘুড়ি ওড়ান, শপথ পড়ান;
দ্বিতীয় জন- ভিন্নমতের ঝান্ডা তুলে দ্বিমত জোটের মধ্যমণি নয়নমণি গণতন্ত্র-জাগরণ মন্ত্র পড়ান।
ঘোষণা ঠিক হলো না অর্ধো-দিবস শোক সভায় দুপুর বেলায় অযথা ছুটি;
বোঝে না দিক অচেনা ঐ রত্ন চোরা আম-জনতা ছুটি ছড়ার শেষ লাইন দুটি!
তাল পাড়ার নয়া গোলক ধাঁধাঁয় গিট্টু বাঁধা সিদ্ধ চালের থালা ভরা নানা তালের হরতালে,
কেন জানি না, যায় না মনে খুশখুশানি, চুলকানি তার হয়রানি সারা বেলার শরীর গালে - ঝাঁকড়া চুলে।
তাই এবার দিলাম আরাম ভোর, তোষকেরে এক লম্বা তুলায় গরম চুলায়;
ধর্ম গোড়ায় সব হারাম তোর, চুসকেরই চুসতে থাকা নিষদ্ধ লীলায় অবলীলায়।

দু’ই নাগরিক মারা গেলে, কি হবে তুমি- বুদ্ধিজীবি নাগরিকের অসৎ পখের অলস চলায়?
দু’ই মতের মৃত্যু হলে, কি পাবে তুমি- পরজিীবি অগ্নি তুষের শাহাবাগি জাগরিক ঢংয়ের জনসভায়?

চলো তবে এবার মুক্ত তলায় হাত ধরো সবাই, গান করো, সেই সংগীতেরই প্যারডি করো -
                                    ‘আজ আমাদের ছুটে রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি’;
দু’ই নারী’র বিয়োগ ব্যথায়, রক্ত ঝরা আগুন বেলায় মুক্তি পেলো -
                                    ‘থালা ভরা গরম রুটি, আজ আমাদের ছুটে রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি।’

[রচনাকালঃ ২১ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ দুপুর ২:১৩ মিনিট।]

Tuesday, March 19, 2013

ক্ষুধার গলায় ছুরি


ক্ষুধা’র নাম জ্বালার ঝোল, বিয়োগের এক গণিত অধ্যায়;
কষ্টের বাগধারা ছড়ানো চিলেকোঠায়, যা শীর্ষজনের সৃষ্টি।
আজ রাতে প্রার্থনায় যোগ হবে সেই পুরনো অভিযোগ -
‘সৃষ্টিকর্তা তুমি কেন আহার দিলে না অসহায়কে!
কেন রাত্রিযাপনে পেটের পরে পাতলা চামড়ায় আগুন?
মনে হয়- এসিড ঢেলে নাড়ী পুড়িয়ে ক্ষান্ত হবে
তোমার প্রভু।'
মনে হয়- তোমরা টিকেট কেটেই এসেছো এ পাড়ায়,
আর আমি? মাঙনা টিকেটের ভ্রমনে খেলাম ধরা।
টি.টি বললো, ‘টিকেট দেখাও নয়তো নো জলখাবার।’
ঠিক তেমনই শুভ-ঘটনা চক্র ছিলো ভাগ্যে!
নব যুগের নব ঋতুতে জীবন চলেছে বহুমাত্রিক মহিমায়।
দামী আর মহামূল্যবান খাদ্য-দ্রব্য তো চাইনি!
চেয়েছি শুকনো রুটি আর সামান্য কিছু  শর্করা।
পঁচা অথচ বাঁসি খাবারে দূর্বলতা কেটে যাক এই যা।
তারপরও যে মিললো না আহার, এক টুকরো রুটি!
ভাবনারা খেলতে চায় না বেরসিক ক্ষুধার্ত-জনের সাথে।
মিটি-মিটি তারার দল আর চাঁদের রুমালি রুটিতে
পেট ভরেই তো কেটে যাচ্ছে শতো প্রহর আর ঘন্টা।
এবার একটা শূণ্য পাকস্থলীর নায়ক হবো ভাবছি!
আহার ছাড়া মানুষ যদি নাই বা বাঁচে,
তবে আমি কীট হবো; লাল পিঁপড়া দলের সদস্য।
কেউতো টেনে আনবে এক টুকরো চিনি, অথবা -
একটি গমের দানা। এই বসন্ত তাতেই চলবে বেশ।
আর তাতেই বেঁচে যাবো নরকের এই পৃথিবীতে।
যে যাই বলুক, আজ রাতে উপোস ভাঙবে না জেনো।

[রচনাকালঃ ১৯ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৯:৩৪ মিনিট।]

নষ্টা শিকারী




ভেজাল বিরোধী নেতা আমি দরজার বাহিরে একা,
ভেতরে আছে যুবতী নারী- খাঁটি
আর উত্তপ্ত টাটকা খাবার হাতে পরিবেশনায় প্রস্তুত;
সন্দেহের মাত্রাটা বেড়েছে বলেই ভোর বেলায়
কড়া নাড়া ওর প্রবেশদ্বারে।
কেন এবং কিসের জন্য এমন!
“বাসার ভেতরে কেউ আছেন? এধারে ‘নষ্টা’ শিকারী।
প্রকৃতির যতো ভেজাল পাওয়া যাবে হয়তো এখানেই।
তারই খোঁজে মাপ-কাঠি আর জরিমানা হাতে।
সাজা শোনানোর দৃঢ় প্রতীজ্ঞায় আইনের লোক হাজির।”
একটা ঠক্ করে আওয়াজ হলো। দেখলাম,
সে এক সুন্দরী অষ্টাদশী কন্যা, কেন তবে
অত্র এলাকার সেরা কু-কর্মের সব কিছুতেই ছলনা তার!
“না তো, এখানে নারী নেই।
আমি পুষ্পধারায় শোভা বাড়ানো এক খোলা বাগান,
তোমার ‘ফুল’ নেবার জন্য বিশেষ উপযুক্ত আমি
এবং অপেক্ষায় বসে থাকা এক সেবা কর্মী মাত্র।”
মনে হলো -
দরজা খুলে দাঁড়ানো উন্মুক্ত বক্ষের মেয়েটি এক বেশ্যা,
কাম পাড়ার নিছক একজন কামিনী।
“এসো হে বালক, শক্ত পেশীর উদাম শরীরে ঢাকো আমায়।”
বুঝে উঠতে পারার আগেই কামিনীর মিষ্টি হাসিতে
ভিজে গেলাম,
প্রেমের ভেজাল প্রতিরোধে এক ম্যাজিস্ট্রেট প্রবেশ করলো
কু-কর্মের শরীরি ভাষা রপ্ত করতে।

[রচনাকালঃ ১৯ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ সকাল ৭:৩৯ মিনিট।] 

Monday, March 18, 2013

সময়ের বাতিক


সময়ের চোরাবালি, দু’হাত আমার শূণ্য খালি;
তারপরও যদি থামতে বলো।
কিছুই ছিলো না সে প্রবাদ কথায়,
ছিলো বালুচরে প্রাণশূণ্য প্রান্তে নিরব ধূ ধূ বালি।

সময়ের চোরা কেশ ছিলো অলিক, মজবুত, সামাজিক;
তারপরও তোমার গল্পটা ভিত্তিহীন।
সময়ের হাত ধরা ছোট্ট নদীতে ভাসা,
নৌকায় বেয়ে চলা অনুভূতি যেন অশান্ত, নির্ভীক।

সময় বাঁচে অসম কাননে, অর্থহীন নিয়ম কানুনে;
যেমনটা নিয়মের বিপরীতে আরেক নিয়ম।
সবুজ প্রান্তে অজুহাতের কথা বলা, মহরত শেষ;
বাঁধানো সময়ের মাচা নীচে, গভীরে অথবা উনুনে।

[রচনাকালঃ ১৮ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ বিকাল ৫:৩৯ মিনিট।]

মুন্নি’র জন্য প্রেম



চাই নীলের সংলগ্ন স্বপ্ন তীরের বালুকণার ‍স্বীকৃতি,
চাই পুরুষত্বের খাঁজ কাটা বলিষ্ঠ শ্বাসে বিশ্বাসে গড়া
পাহাড়ের মতো সুঠাম সবল - দৃঢ় দেহ প্রকৃতি;
স্বপ্ন - একটা বাহুতে তুমি প্রেম সীমানা এঁকে নিবে,
সংকল্প এমন আজীবনের।
মিলনের রঙ মাখবে বলে আজ বসন্তের সেরা আমেজ
গাইতে শুরু করেছে কুহু-কুহু,
সবুজে আর নতুন সাজে এলোমেলো ঢঙে রাঙা তালে।
আমি ঝরণা স্রোতধারায় ধাবমান কলকল শব্দের বিশুদ্ধ জলরাশি,
সুকেশি নীহারিকার প্রাণ আদায় করে নেবো ঠিক তেমনই।
আশা আর দূরাশার স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন পূরণ হবে নিশ্চিত,
তাকে ছুঁয়ে, প্রেম রক্তমাখা সুরভি-সুগন্ধী
গোলাপ খোঁপায় এঁটে দিতে চাই।
বাহুবলে পৃথিবীটা এক ইঞ্চি জাগিয়ে নেবো বলেই
রাম-রাবনের টানটান উত্তেজক পেশী ধারণ করেছি চিত্তে,
করেছি সাহসী বুকের ছাতি আরো ছ’ইঞ্চি চওড়া-দীর্ঘ।
তুমি লাবণ্য, অপরূপা, মেহগণি গাছের নীচে
ছায়া আর আশ্রয় খোঁজা শামুক এমন,
সংস্কৃতির খোলস ছেড়ে বের হও জলদি,
আমি তোমাকে ছোঁব সেরা বিনোদনে, তোমার পরশ মাখবো;
কঠিন বুকের চত্বরে দেব ভালবাসার নিরাপত্তা সারাজীবন।

[রচনাকালঃ ১৮ মার্চ ২০১৩, সময়কাল” সকাল ১১:৩০ মিনিট।]

Sunday, March 17, 2013

ম্যাও, ম্যাও এবং ম্যাও



এক ছোট্ট শব্দের কন্ট্রাক্ট নিয়েছিলো বিড়াল ছানা,
হাত - পা চেটে দুই তিন বারে মায়ার ডাক দিনভর-
ম্যাও, ম্যাও এবং ম্যাও।
মহারাণীর অবসরে সঙ্গী, ক্ষানিক জঙ্গিও বটে দুধের বাটিতে;
চুক চুক করে মায়া‘র দুধ টেনে নেয় জিহ্বার স্বাদে এক্কেবারে গভীরে।
ঝির ঝির বাতাসে রাণী’র তর সয় না মাঝ রাতে বাঁশির সুরে;
ষোলকলার আদর-কলা রপ্ত করা তার; অভিমান মেশা নেশার ছলে
শুধু ম্যাও, ম্যাও করে কোলের মাঝে অবুঝ সাঁঝে মুখ লুকানো।
বসন্তকেও যে আদর দিতে হয় কৌশলে বিড়াল ছানার মতোই।
সেই হাত পা চেটে পুটে, নখের আঁচড়ে টিখর রসালো প্রেম।
সেই রকম আদর যা লিখে রাখা যায় ইতিহাস পাতায়,
সৌজন্যে যদি কাউকে দিতে চাও আবারো প্রেম নিবেদনে,
বলতে চাও ম্যাও, ম্যাও এবং ম্যাও।
হাতের আঁচড়ে বাঁধ ভাঙা প্রেম উপচে পড়ে তার উত্তরে।
লোভ হয়, হিংসা হয় বিড়াল ছানার প্রেম অভিলাষে
তার প্রতি, অচেতনে এবং ভীষণ সচেতনে;
রাণীর নরম বুকে চড়ে মাথা রাথা বিশ্রামের নাম ম্যাও।
ইচ্ছে - মহারাণীর দুধের বাটিতে মুখ যদি দেয়া যেত;
ওর কোমর ধরে পুরোটা ‘ম্যাও’ টেনে নিতাম এই ধারে।

[রচনাকালঃ ১৭ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৯:১৭ মিনিট।]

হত্যার বিপরীতে হত্যা চাই - বিচার চাই


শান্তি দাও বন্ধু, ওরা মরতে চায়না আর;
ওরা শকুনের বাচ্চা গোলাম আযমের দল মরতে চায় না আর।
শান্তি আসুক প্রাণে, সম্মান করো অপরের মত;
অপরের শ্রদ্ধায় সালাম ঠুকো একটু আবারো।
ধর্ম অপরকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়, হত্যায় না।
কেন তবে মেরে ফেলবে - এক এক করে মানুষ!
ওদের মাঝে কি ভালো কিছু খুঁজে পেলে না?
বর্ষায় যারা ভিজে শস্য ফলায়, মাঠে - ঘাটে ছুটে বেড়ানো চাষা
অথবা হাফিজ রাখাল বালক বা সকল গোলাম কূল বংশধরের মাঝে??

কেন ভাইয়ে - ভাইয়ে এতো লড়াই বাধলো?
আর তোমরাই বা চেয়ে চেয়ে কেন দেখছো এখনো!
থামাও ওদের এখনই, এখনও সময় শেষ হয়নি বলছি তোমাদের।
’৭১ এর যে যুদ্ধ একটা স্বাধীন অস্তিত্ব আনলো,
আনলো একটা স্বাধীন পতাকা, সাথে আনলো কিছু বিয়োগ ব্যাথাও;
সেই কষ্টবোধ-অতীত বিষে আরো একটা যুদ্ধ ডেকে আনলে তোমরা!
যারা আজ খুন হলো, আগুনে পুড়লো;
মরলো এবং মারলোও; আর যারা তোমার মতের বিপক্ষে গেলো -
কি করবে ভেবেছো তাদের নিয়ে? চলবেই খুন? হত্যা একর পর এক?
কয়টা ফাঁসী কার্যকর হলে কতো সাধারণ মরবে ভেবে দেখেছো?

তোমার নিরাপত্তা যারা দিবে তারাই তোমার শ্রত্রু এখন, সর্বনাশ!
কি ভৌতিক স্বাধীন দেশের স্বাধীন জনতা - তুমি আর আমি!
কেন দূরে ঠেলে দিচ্ছো একটু একটু করে আমাকে বা ওকে?
টুপী আর দাড়িতে যে যুদ্ধাপরাধী, সবাই আজ অপরাধী নয়... ভেবে দেখো;
৪২ বছর গতো হয়েছে, আবার একটু ভেবে দেখার সময় এসেছে বলছি তোমাদের।

খুনী বা গণ ধর্ষনকারী অথবা যুদ্ধ অপরাধী কি মানুষ নয়??
যাবজ্জীবন কি পর্যাপ্ত ছিলো না??
যারা আজ মরছে ওদের কেউ যদি হয় -
তোমার ভাই অথবা পিতা।
তোমার মাতা অথবা ভগ্নি।
তোমার পড়শী অথবা বিরোধী মতের কেউ - আমার মতন;
পারবে কি আনন্দে গা ভাসাতে আমার মৃত্যুতে??
যদি পারো - বুঝতে হবে তুমি মানষ নও, জঘণ্য পশু এক।
যুদ্ধ অপরাধী এবং তোমার মধ্যে- পার্থক্য থাকলো কি আর?

হয়তো তার পরও ওরা মরবে। কারণ মমতা - বিবেক হারিয়ে গেছে
সকল চত্ত্বর থেকে এটা সত্য। আমিও মধ্যপন্থি এক মানুষ -
আমি বিচার চাই; আজকের সকল হত্যার, ফাঁসি চাই আজকের ৪০ হত্যার;
যারা মারলো - উত্তেজনা সৃষ্টি করলো, যারা হত্যা-যজ্ঞ করে যাচ্ছে;
থামাও তাদের অথবা তুমি-আমি কাল কেউ-ই নিরাপদ নই।
হত্যার বদলে হত্যা একটা সংস্কৃতি হতে পারে না।যদি চাও মানুষ খুন,
তবে চলুক হত্যা। মানুষের সংখ্যা কমুক আরো জনকে জন।
ভালোই হবে, মানুষে - মানুষ ছিঁড়ে খাবে তোমার আমার গোশত্,
স্বাধীন পতাকা হারাবে মর্যাদা, অশ্লীলতায় গা ভাসাবে পৃথিবী;
আর তোমার অহংকার বাংলা মানচিত্র হবে বিপদগ্রস্ত।
চাইতে থাকো বিচার - মানুষ হত্যার বিচার, আমিও যোগ দিলাম তাতে।

[রচনাকালঃ মার্চ ১, ২০১৩, সময়কালঃ রাত ২:১০ মিনিট।]

লাল সূর্য

রাত জাগা অন্যায়ের স্বপ্ন ঘোর মিশিয়ে দিলে তুমি
হে লাল অগ্নি গোলক, উষ্ণতার দেবতা।
শীতল দেবীকে গরম চাদরে ঢেকে বললে -
আমি তোমার উপস্থিতি মানবো না,
টানবো না এদিকে, ঊষা লগ্নে;
বলবো না তোমাকে হিম প্রবাহ দিতে এদিকে-ওদিকে।
মানুষের শীতল জমাট বরফ খণ্ড অনুভূতিগুলো ভীষণ নীল,
স্নিগ্ধ ভোরের লাল উপসংহারে ঝংকার তুলে ঝনঝন করে
ভেঙে ফেলবো আমি জড়তা।
একটা প্রাণোচ্ছল উদয় হোক মনে তোমার;
আকাশে - বাতাসে নষ্ট গলিয়ে সুখ-সমৃদ্ধির সাগর বয়ে যাক পৃথিবীতে।
জমাট কষ্টগুলো সমতলে ফুল হয়ে সৌরভ দিক।
প্রতিটি প্রাণে বাজুক ভালোবাসার গীত, চর্চা হোক নির্ভেজাল লাল উষ্ণ প্রেম।

[রচনাকালঃ ০২/০৩/২০১৩, সময়কালঃ সকাল ৬:৫৮ মিনিট।]

অনুভূতি

ফুলের কোলে থাকতে চাই না, চাই না বকুলের মালা পরতে।
সুখের স্বপ্নে দুঃখ চাই না আমি, চাই না রাজকন্যার হাত ছুঁইতে।
প্রণয়ের রাতে জ্যোৎস্না চাই না, চাই না পূর্ণিমার উজ্জ্বল আলো।
দীঘি’র জলে নাইতে চাই না আমি, চাই না ভ্রমরার বর্ণ কালো।

মিলন অনুভূতির মিষ্টি স্বাদ চাই না, চাই না কারো প্রেম স্পর্শ।
গধূলী লগ্নে বিদায় চাই না আমি, চাই না সোনালী উৎকর্ষ।
শূণ্য বুকে লংকার ঘ্রাণ চাই না, চাই না চন্দন কাঠির সুবাস।
দূরত্বের মাঝে আশ্রয় চাই না আমি, চাই না পদধ্বনির আভাস।

জীবন তীরে বৃক্ষ ছায়া চাই না, চাই না অট্টালিকার ঘর দুয়ার।
স্মৃতি ভ্রমে ফিরতে চাই না আমি, চাই না মজুরী ভাঙ্গা খুয়ার।
প্রেমের বদলে তার প্রেম চাই না, চাই না কোমল মুখটার দেখা।
কষ্টের মাঝে বাঁচতে চাই না আমি, চাই না ধরতে সুখের রেখা।

[রচনাকালঃ ২/৩/২০১৩, রাতঃ ৯:৩৫ মিনিট।]

শীতের পাখী


আমি চিকিৎসক বলেই একটি এল.এম.এস উপাধি প্রয়োজন ছিলো,
দোষারোপে নাতিশীতোষ্ণ বাসীরা ভুল, ভুল এবং শতো ভুল তুলে দিলো।
ছিলাম অগ্নি জ্বরে উষ্ণতায় টগবগে ফুটন্ত পোড়া শব্দ,
আমার ভালোবাসার বাণীতে শুধুই কবিরাজী আয়ু বর্ধক চিবিৎসা সেবা।
তারপরও শপথপূর্বক লিখিত উক্তিতে ভালোবাসায় বিসর্জন আছে,
আমি তেরো বার নিজ হৃদয় কেটে দেখেছি, একটা ভুল ছিলো অনবরত।
জানতে চাই নি। জানতে চাই নি -
কেন তপ্ত ঝলসানো উষ্ণতায় পোড়া ঝাঁঝ সাজানো...?
কেনই বা শুষ্ক মৃত লাশে রেহাই বা মুক্তি কথা অবশিষ্ট...?
শীতের অচেনা পাখীগুলো যখন এই উষ্ণতা ছেড়ে উড়ে যায়,
চেয়ে দেখি ওদের পলায়ন, নতুন ঠিকানার খোঁজে;
প্রতিটি এমন উড়ে চলায় স্মৃতিরা মলিন করে আমাকে।
প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ নির্মান যে পারি না,
তাই উড়ে চলা ঐ পাখীর গতিরোধ করতেও চাই না;
কিভাবে করবো বলো, ওসব সংস্কৃতের ভাষাবোধ আমার জানা নেই।
আর বুঝতেও চাই না ন্যাড়া ডোবায় সবুঝ শ্যাওলায় ফুল ফোটে কিভাবে।
আকর্ষণ তো কম ছিলো না এমন প্রস্ফুটিত প্রেম ভেলায়।
একটা এরোড্রোমে দাঁড়ানো এরোপ্লেন আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যায় বার বার,
পাখীর উড়ে চলার প্রতিটি অখণ্ড বিশ্রুত প্রাচীর টপকানো দেখে যাই।
চিকিৎসক ছিলাম বটে, দু’টি হৃদয় সেলাই করে জোড়া দিতে যে পারলাম না!
আমি পারলাম না বাহুর স্পর্শ কবিতার পাতায় শুদ্ধ করে লিখে রাখতে।
প্রশ্বাসের শ্বব্দে পাখীর ঝাপটানো নিবন্ধ,
বিশ্লেষণের শব্দ গাথুনিতে থ্যাঁতলানো লেখায় অষ্পষ্ট পাখীর অবয়ব চিরদিনই রয়ে যাবে।

[রচনাকালঃ ৩/৩/২০১৩, সময়কালঃ রাত ১১:৪৫ মিনিট।]

লাশের খেলা

এক হাসিতে দুঃখ নিতে নাই, ভুলিস না কেন - হে পোড়া নগরী;
মসৃন সড়কে এখন লাল রক্তের বীজ, শুধু লাল রক্তের লাশ আর লাশ।
অবুঝ মানুষের বিশ্বাসে আজ হিংসার দামামা বেজে উঠেছে,
ধর্ম প্রচারে ইসলাম আজ উগ্রতার চিহ্ন না-কি বয়ে বেড়ায়।
শুনেছি --
চাঁদে না-কি সাঈদী ভাসে, আমি বলি সাঈদী ভাসে কোটি চাষার হৃদয়ে;
কয়জন মানুষের লাশ উপহার পাবে তোর নেতা? সাঈদী তো পেলোই যখেষ্ট।
সাঈদী ভাগ্যবান উনি পুরুষ তাই, তোদের মতো অভাগা নয়, বিক্রি হওয়া
বিরানী খাওয়া হিজড়া নয়।
শাহবাগের পাগল সন্তানেরা শ্লোগান তুলেছে রাজাকারের পেটে,
ঘুষ খাওয়া নব্য দেশপ্রেমী সিপাহীরা মায়ের কোল খালি করে দেবার প্রতিযোগিতায়।
আমার দৃষ্টিতে- ওরাও পাক হানাদার বাহিনী চেয়ে বেশী আগ্রাসী,
ইয়াহিয়ার বাচ্চারা যখন রক্তচক্ষু দেখায়, শাসন করে আমাকে;
বুঝতে হবে --
বাম আর শাহবাগ দালালেরা প্রতারক নব্য রাজাকার সেজেছে এখন -
ওদের ইন্ধনে মানুষ মানুষকে হত্যা করছে, নির্বিচারে মানুষ মারছে; বিচার এখন ওদের গুলিতে, বন্দুকের ডগায় আর শ্লোগানে - ইমরানের পকেটে।
আদালত কই? বিচার ব্যবস্থা কই?
দেখ ওসব শাহবাগের মঞ্চে। চেয়ে দোখা ওসব শাহবাগের টয়লেটে বিস্তর।
দূর্বলরা শুধু ইট ছুঁড়েছে, মানুষ মেরেছে কই! আর কয়টা গুলি খেয়েছিস বাসন্তী?
নাগরিক সেবায় আবারো ভোট ভিক্ষায় নামতে হয় যে...।
কোন প্রদেশে যাবে হে বাসন্তী, শুভ্র হৃদয়ের কালো শুকোর;
মানুষ মারা তোর নেশা, বিভেদ গড়া তোর পেশা -
ঘৃণা আর ধিক্কার দেই তোদের ছলনার রাজনীতিকে, জয় বাংলার শ্লোগানকে।

[রচনাকালঃ ৪/৩/২০১৩, সময়কালঃ সকাল ৬:২৯ মিনিট।]

ক্রয়-বিক্রয় ডট কম

দু’ আনা তিন আনা করে জমানো টাকায় আজ বার্মিংহাম প্যালেস কিনতে যাবো...।
বাগদাদে সাদ্দামের প্রাসাদটা আমেরিকানদের কাছে ভাড়া দিয়ে এসেছি এই একটু আগে।
কিনবো যখন ভারত মহাসাগরের পুরোটা কিনবো.... তিমি আর হাঙ্গরের চাষ হবে সেখানে...।
আর ব্রিটিশ চোরেরা মোঘলদের যে অলংকার চুরি করেছিলো, রাণীর কান থেকে খুলে, বাক্স থেকে বের করে সেগুলোও ফেলে দিবো তোমাদের কাছে...।
তোমরা চাইলে দু’এক রাষ্ট্র কিনে দিতে পারি তোমাদের জন্য... উপহার স্বরূপ।
নেবে তো? কি চাই না? বলোতো - বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রে চলে কি না।
বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র তোমার চাই না?
অবাক করা কান্ড! ওটা সুখী মানুষের রাজ্য যে! ঢের সুখ আছে সে দেশে। কি নেবে না?
তোমরা ভেবে বলছো যে, তোমরা নেবে না! কারণ হিসেবে বলছো, ওটা এখন ছারপোকার দেশ। শাহবাগের ভুত আর চাঁদের দেশের বুড়া বাস করে সেখানে।
সুখও নেই কোথাও। ব্যর্থ রাষ্ট্রের ষোল কলা পূর্ণ করেছে হাভাতে বাঙ্গাল আর বাঙ্গালীরা। চলো তবে তোমাদের জন্য ভারতই কিনে দেই...।
দু’এক আনায় প্রনব বাবুকেও পেয়ে যাবো হয়তো। মমতা’র শাড়ী না নিলে, পেটিকোট তো আছে আমাদের।

[রচানাকালঃ ৩/৪/২০১৩, সময়কালঃ বিকাল ৪:১২ মিনিট।]

জুটি’র হলো ছুটি

অনুপায়ে হিম জীব, জীবিকার আশ্রয়ে ছুটে চলা
এক টুকরো প্রদীপ্ত ধরায় মিশে যাওয়া আবেগ।
অতিশয় মিথ্যাবাদী ছোট্ট ঘরে বেঁধে ফেলা মন,
তার দু’পায়ের ঝুমুরে উজ্জ্বল পূর্ণিমা তিথির চাঁদ।
দেখে লাভ হবে কি পূষণের প্রেমে চাঁদের ক্ষোভ?
শ্রেষ্ঠ বিরহ কবিতা পাঠে বিধ্বস্ত নাগরিকগণ,
বোমা আর আগুন জ্বালায় পুড়ছে বিধান সভা।
অদৃষ্ট সভ্যতা মুখ থুবড়ে পড়ে ঐ আঙুলের রিঙে,
এক, দুই, তিন করে লক্ষ্য ছিলো সেই দীপাবলিতে।
তার কোমল হাতের স্পর্শ দীপ্তি ছড়িয়ে থমকে যায়,
প্রকাশযোগ্য পদ্মিনীর ভ্রান্ত ছায়া ঘিরে ফেলেছে এখন।

[রচনাকালঃ ৫/৩/২০১৩, সময়কালঃ রাত ১২:৪৮ মিনিট।]

পলায়ন

যখনই মমতার সর্বনাশা পলায়ন
আশীর্বাদ বদলে
শুকনো পাতা ঝরা ঋতুতে আমরা,
আগামীর স্বপ্ন দেখা এই বর্তমানে।
কিন্তু, তারপরও যে ভবিষ্যত
গান করে না, করে না আবৃত্তি;
সেই আঁধার মহাকালের মহরতে
নাই বা লিখি কবিতা অথবা গান।
ঐ জলোচ্ছ্বাসে শ্বাস কেড়ে নেয়া
গতকালের উচ্ছ্বাস ভরা আবেগ
মৃত পাতারা মৃত্তিকা সেজেছে,
অনুশোচনায় শূণ্য ভাবমূর্তি সচল।

[রচনাকালঃ ৯ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ ৮:৪৫ মিনিট।]

লাল সূর্যের উদয়

আজ আবারও মাঝ রাতে ঘুম ভেঙেছে। একটু ঠাণ্ডা জলে মাথাটা ভিজিয়ে নিয়েছি। কেননা দূষিত চিন্তা আর কষ্টবোধগুলি ঝেড়ে ফেলাতেই প্রফূল্ল দিবসের সূচনা। আয়োজন ছিলো মুক্ত বায়ুসেবনে দীর্ঘ দীঘিজলে চোখ রেখে প্রভাতের প্রারম্ভ ঘোষণা। আঁধার যখন সরে যাবে ধীরে ধীরে পাখীর কলরবে ভিজবে মন। আমি চোখ রাখবো দিগন্তে লাল আভার খোঁজে। মুগ্ধ বায়ু আর দীঘির জলে সিক্ত মন আমার ছুটে যাবে প্রশান্তির খোঁজে দিগ্বিদিক, পূব থেকে পশ্চিমে আবার উত্তর থেকে দক্ষিণে। সূর্য উদয়ের সাথে এক নাড়ির টান আছে আমার। মনে হয় কতো জনম ধরে এমন উদয়ের সাথে ভাব চলেছে। মাঝে মাঝে কাছে যেতে ইচ্ছে করে এমন রক্তিম লাল তপ্ত আগুনের আবির্ভাব মুহুর্তে। আনন্দ থুঁজে পাওয়া ঊষার লগ্নে এবং সাক্ষী রেখে যাওয়া গোধূলী বেলায় যেন অস্ত নামার অন্তিম কালে তোমার সব ঠিকঠাক থাকে।
আমি এমন কালজয়ী এক উদয়ের আশায বসে আছি। এমন একটি উদয়ে অশান্ত সমাজে শান্তি আসুক প্রাণে। সব হৃদয়ের শতো দুঃখ-জ্বালা ভেসে যাক হ্রদে। আমি পাষন্ড পিতা নই যে শিশু হত্যা করবো। আমি এমন অভিশপ্ত বালকও নই যে ছেয়ে যাওয়া ঘন কালো মেঘে লাল শোভা থেকে তুমি বঞ্চিত হবে আর তা চেয়ে চেয়ে দেখবো। আমি নিশ্চিত করতে চাই আবেগমাখা শুষ্ক চুম্বনে এক গাল হাসি মাখা সূর্যের অস্তিত্ব তোমার ভূবনে। যার সুখময় দীপ্তিছড়ানো রেখা তোমার ঘুমন্ত মায়াবী মুখ স্পর্শ করবে, যার উত্তপ্ত ছোঁয়ায় তুমি জেগে উঠবে ধীর লয়ে। ঘুম ভাঙার সেই মুহূর্তটির উপলব্ধিতে তুমি ব্যাকুল হয়ে জানালার প্রান্তে ছুঁটবে। এইতো এখানে, ঠিক এখানে। ওপাশের চিক চিক করা আলো মাখার লোভে সরিয়ে দেবে কোমল আবরণ, তোমার খোলশ, তোমার ঢাকনা, তোমার দেয়াল, তোমার পর্দা। নিঃসংকোচে আলো ডলে দেবে তোমার প্রিয়ার সর্বাঙ্গে। বলবে- ‘দেখো ভোর হয়েছে, কি উজ্জ্বল চারদিক!’
আমরা মানুষ বলেই এতো আয়োজন। এতো শুরু, এতো সমাপ্তি। একটা শুভ উদয়ের প্রার্থনা করে যাই অবলিলায়। সেই ছিচকে চোর, আর নাকের ছিদ্র দিয়ে শহরের গলিত আবর্জনা বের হওয়া ফুটপাতের সর্বহারা নাগরিক থেকে শুরু করে আমি এবং তুমি। আমরা আয়োজন করে চেয়ে থাকি উপরে, ঐ খোলা আকাশে। একটা সুন্দর সকালের আশায়। আঁধার রাতের বিদায় বেলায় তারার ক্ষীণ উপস্থিতি জেগে উঠুক লাল রেখায় পূবের আকাশ। একটা চুড়ান্ত সুখের প্রাপ্তি ঘটুক মনে মনে কোটি জনে। পথের পাশে প্রার্থনায় জোগ দেয়া সাধারণের চোখে দেখি আলোর উৎসব প্রস্তুতি, মহৎ দিবসের ঘোষণা বাণি শুনতে পাই ভোরের আযানে। ঘড়িতে মাত্র পাঁচটা বেজে পনের মিনিট মাত্র। একটা আয়োজন চলছে প্রকৃতির। পাখীরা তখনও গান গেয়ে চলেছে অক্লান্ত পরিসরে। এমন সোনা ঊষা লগ্নে নব বসন্তের শিশির ভেজা সবুজ হেসে ওঠে তখনও, হেসে ওঠে পায়ের নীচে ভেজা দূর্বা ঘাসের দল। একটু আড়ালে যদি তাকাও সবুজ পাতার নীচে ঘর সাজানো নব দম্পত্তি মাকড়ের জালে আটকানো হিম কণা দেখতে পাবে। ওরাও কি মুক্তার খোঁজে বসে আছে? এক জোড়া কপত-কপতী যেন বাকী জীবনের উজ্জ্বলতা খোঁজার আয়োজনে অপেক্ষায় চেয়ে আছে কোন উঠানে - এক গ্রাম্য দিবসের কর্মযোগ্য বেলার অপেক্ষায়।
সিটি কর্পোরেশনের পরিষ্কার কর্মী ঝাড়ু মেরে ময়লা দূর করতে মরিয়া, যেন তাঁর ঝাঁটার বাড়িতে সব অশুভ দূর হোক আজীবন। বিহান সকালে যন্ত্রযানের ছুটে চলাতেও আছে দৌড় ঝাঁপ। জলদি চলো, জলদি চলো। অন্ধকারের বগল গলিয়ে একটু আলো যে দেখা যায়। কোথায় সূর্য আমার, এক লাল থালার সূর্য। শোকাহত আঁধার সরে গেছে কোন কোণে - দূরে, বহুদূরে, পূষ্পে ছেয়ে গেছে বন - বাগান। আর আমার ছোট্ট পৃথিবীতে বাজে কতো ঢাক- কতো ঢোল; কতো মায়া, কতো টান চারদিকে। এমন রজনী প্রহর বিদায়ে আছে ব্যথাভরা অশ্রু, আর সেই বিদায়েই আছে উষার চু্ম্বন-আলিঙ্গন মুহূর্ত। আমার চেয়ে নেওয়া- ভালোবাসায় ছেয়ে যাক তোমার কোল, ভালোবাসায় ঢেকে যাক তোমার সীমানা। এমন উদয় আসুক আশীর্বাদের স্মৃতি নিয়ে। লাল বর্ষণে তোমার আঙিনা ভরে উঠুক গোলাপে - সৌরভে। হাসিমাখা শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় - অপেক্ষায় চেয়ে আছি সবুজে, দীঘির জলে আর উন্মুক্ত বিশাল আকাশে আমি।একটা প্রার্থনা - লাল আভায় ছেয়ে যাক তোমার পৃথিবী। উদয় হোক প্রিয় সূর্যের এক উজ্জ্বল জীবনের জন্য।

[রচনাকালঃ ১৬ মার্চ ২০১৩, সময়কালঃ ভোর ৫:৪৫ মিনিট।]