ঘড়িতে সময়

Monday, April 22, 2013

প্রেম অকারণে

বুকের রক্ত দিয়ে যদি লেখা হতো নাম
শুধু তোমার নামটি যে লিখতাম।
হাতের ছোঁয়ায় যদি প্রেম হয়ে যেতো
তবে তোমার সাথেই জুড়ি বাঁধতাম।

দু’টি শব্দে যদি মালা গাঁথা যেতো
‘আমার ভালোবাসা’ গলে তুলে দিতাম।
কারণে অকারণে যদি অশ্রু ঝরতো
কষ্ট বুকে বিরহ গাঁথা রেখে যেতাম।

[রচনাকালঃ ২২ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৯:৪৮ মিনিট।]

Sunday, April 21, 2013

তোমায় দিলাম

আমার পুরনো বেলার
লুকনো স্মৃতি
ডালিম গাছের
ছোট্ট উঠোন
তোমায় দিলাম।

যেদিন আসলে তুমি
চৈত্র ঠেলে;
অজানা বেলার
সে দৃশ্যকাব্যের
রূপক হলাম।

দখিনা ঠাণ্ডা হাওয়া
সাদা মেঘের
সাঁতরে চলা
তোমাকে দিলাম।

ফুলে সাজা বাগানে
রক্ত জবা’র
মিষ্টি হাসি
লিখে দিলাম।

যেদিন আসতে চেয়ে
বিদায় দিলে তুমি -
নয়নে অশ্রুধারা
সাগরের স্রোতধারা
আর
পাহাড়ের ঝরণাধারা
তোমার জন্য
রেখে গেলাম।

[রচনাকালঃ ২১ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৯:৩১ মিনিট।]

Tuesday, April 16, 2013

জাগো বাহে


এই মাত্র পরাধীন মুক্ত জাতি মুখ ফিরিয়ে চলে গেলো।
মিথ্যা বলতে না চেয়ে সত্য কথাটি শুধু রেখে গেলো।
বলে গেলো -
মারবো, ধরবো রক্ত গঙ্গায় ভাসাবো আঙিনা যা দেখি।
সীমানা যতোটুকু এঁকেছিস চারপাশে, ততোটুকুই বিচরন -
ওপরে-নীচে,
সাগরে গভীরে অথবা আকাশের নীল উচ্চতায়;
সবটুকু খালি জায়গায় হিংসা আর উন্মত্ত হৈচৈ আচরনে।
প্রতিশোধ আর খুনের অভিশাপে মারছে এবং মরছে দেশ।

শান্তি, কতোটুকু জায়গা ছেড়েছো আমার জন্য?
পুরোটা জুড়েই না পারার ব্যর্থতা। মুক্তি এলো কই!
স্বাধীনতা কি একেই বলে?
তাল-পাখায় চৈত্রের বাতাস মুখে মেখে নাভিশ্বাষ ওদের;
যারা দিন আনে দিন খায়।
রক্ত নাও অথবা সুখ দাও, সমৃদ্ধি দাও অথবা পুড়িয়ে মারো।
চিরকালের ওই মরন শৃঙ্খল থেকে তোমাকে মুক্ত হতে হবেই।

[রচনাকালঃ ১৬ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ বিকাল ৫:২১ মিনিট।]

Monday, April 15, 2013

প্রেম নগরী


সীথির সিঁদুরে চোখের কাজলে
সুখের সাগরে দুঃখ খেলে।
রেশমী খোঁপায় রত্ন মেলেনি
বিষ মাখানো স্বপ্ন ভুলিনি।
প্রেম নিবেদনে বিরহ জাগে
অন্তরে আগুন নন্দন ভাগে।
সাত রঙের ঐ পল্লব বিহার
উষ্ণ বায়ুতে জমাট নীহার।

নিথর নিরব বিষন্ন পাখী
দেবীর কোলে অর্ঘ রাখি।
দুর্দন্ড প্রতাপে রাজত্ব রাজার,
প্রেম নগরী ছিলোকি প্রজার?

[রচনাকালঃ ১৫ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৯:৫৪ মিনিট।]

Sunday, April 14, 2013

ভয় নাই

ভয় পায়নি ক্ষুদ্র রাখাল বালক।
দূর্গম পাহাড়ে শিকারী বাঘ।
তুচ্ছ-অসচ্ছ বৈষম্যে অতিষ্ঠ
প্রাণ, সজাগ পৃথিবী নিশ্চুপ।
বীর হতে হবে নয়তো ফাঁসি।
মেষ পালকের তুলে নেয়া লাঠি,
শাস্ত্রের কৌশল যা জানা ছিলো
পুরোটাই প্রয়োগে ভোর হলো।

আমরা পরাজিত সৈনিক নই।
আমরা বীর হতে চাইনি, তবুও-
শত্রুকে বধ করে সামলে চলি।
আমরা হার না মানা রাখাল।
মেষ পাল নিয়ে সবুজ ঘাসে
বিচরনে সত্য প্রবাদ সুস্পষ্ট।
মেষ-পালক পালিয়ে যায়নি তো!
আত্মশক্তি প্রবল, ভীত হলে চলে?

[রচনাকালঃ ১৪ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১১:৫২ মিনিট।]

Saturday, April 13, 2013

স্বাগত ১৪২০

 

ভর্তা দু’পদের লইট্টা শুটকি আর আলুর,
আছে ইলিশ ভাজা, সরষে ইলিশ;
আরো আছে- মরিচ বাটা, পান্তার সাথে
কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ।
বাংলা নতুন বছরে এমনই পরিবেশনা,
আমার নববর্ষ ১৪২০ টেবিলে।
আয়োজন পরিবার, স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব
আর জেল খাটা আসামীদের জন্য।
চোর-ডাকাত, খুনীদের জন্য কিভাবে এসব!
হ্যাঁ...! ওদের জন্যই পরাণ কাঁদে।
মনে হয় কবিতা লিখি যোদ্ধার হাতে।
কে বললো ওরা দেশ ছিন্ন, মস্তক বিচ্ছন্ন।
উন্মাদ, অচেতন, বস্ত্রবিহীন-নগ্ন।
ওদেরও তো বঙ্গ অব্দের নানা শব্দে
নিজেকে সাজানোর অধিকার আছে।
সবার সাথে একত্রে গা ভাসিয়ে উৎসবে
নেচে-গেয়ে পরিবেশ রচনার ইতিহাস আছে।

চারুকলা’র প্রান্তে যাবো না আর।
রমনা বটমূলে যাবো না ছায়ানটের সংগীতে।
শাকিল আর শাহবাগ মঞ্চের দলে দুলবো না,
বর্ষবরণে’র জনতার ভীড়ে হারাবো না পহেলা বৈশাখে।
জানি তুমিও সহ্য করবে না বর্ষবরণের এ বিভেদ।
যারা বর্শা ছুঁড়ে বর্ষায় একদিন কাদাপানিতে মাছ  শিকার করেছিলো
পহেলা বৈশাখে সরিসৃপের ভয়ে জড়োসড়ো তারা,
হায়না আর গোপীদের ভাল্লুকের তাড়া খেয়ে আশ্রয় খোঁজা অসহায়।

না-তো তাদের তো ডাকিনি পান্তা-ইলিশে!
যারা বিভেদ এঁকেছে পহেলা বৈশাখে।
প্রতিরোধ গড়েছে অকারণে আমার বিরুদ্ধে!
আর যারা ছিলো কাঠগড়ায়, ফাঁসি মঞ্চে আর পুলিশী নির্যাতনের
নানা সীমানায়; হাসপাতাল চত্বরে বা দীর্ঘ রিমান্ডে,
যারা ভন্ড বিচারকদের ফাঁসি ঘোষণার আতঙ্কে সৃষ্টিকর্তার শরনাপন্ন।
মুক্তিকামী মানুষেরা- যারা গ্রেনেড ছুঁড়েছিলো একাত্তরে
তাদেরও ক’জন শিকল পরা লোহার জেলে এখন অকারণেই।
এক্কাবারেই অকারণের জিদ ধরা স্বার্থভরা দেশ দ্রোহ
বা নোংরা রাজার নীতিতে ভুল পথে চালিত মানুষ ওরা,
আহারে মানুষ তারা।
হালখাতার ছাল ছেঁড়া হিসাবের গায়ে হলুদ দিলেও লগ্ন তো এলো না,
ভাবের মানুষ ক্লান্ত আগুন জ্বালা সভ্যতায় বৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড।

মানুষের কষ্ট বোঝা ডাক্তার তুমি?
তোমরা মানুষ হলে কেন স্বীকৃতি দাও না বালু-চরের?
চোরাবালুতে ডুবে যাবার যেমন আতংক,
তেমন উর্বর ভূমিতে শস্য ফলানোরও তো সুযোগ আছে।
তোমরা বরং মানুষ বাঁচাও নাড়ী গুণে।
অথবা আরো শেখো বইয়ের পাতায় যা বাকী ছিলো,
এখনও শেখা হয়নি সাম্য রচনা।
ততোক্ষণে আমি নেতাদের মানে তোমাদের ভাষায়
আসামীদের একটু আপ্পায়ন করে আসি।
যদি নিজেকে অপরাধী ভেবে নাও -
আমার মতো অথবা তাদের দেখা দেখি,
তবে চলে এসো পহেলা বৈশাখে অপরাধী চক্রে;
             আমার বর্ষ-বরণ উৎসবে সভ্যতা বাঁচানোর মেলায়,
আসো সবাই মিলে -
১৪২০ সাল কে হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে স্বাগত জানাই এক সাথে।

[রচনাকালঃ ১৩ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১১:৪৫ মিনিট।]

Wednesday, April 10, 2013

নেতা শূণ্য পথ চলা



স্বল্প ভাষায় উড়ছে নগরী
নিরবতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে
লোভ-লালসায় পর্বতের
উচ্চতা বেড়েছে আগেই।
আমরা বাম-ডান করে
খাবার প্লেটে মগ্ন সবাই,
দু’লোকমা মুখে দিতেই
ছিঃ ছিঃ চৈত্রের ওয়াক থু।

ভাষাহীন মানবতা উপুড়
হয়ে পড়ে আছে ডাস্টবিনে,
রক্তা ভেজা ন্যাপকিনের
লাল বর্ণ শুকিয়ে গেছে।
চার দশকের গোলাম সে
বড় পিতার বিয়োগে হায়,
আমরা বসন্ত মাড়িয়েছি
কবে- কই মনে নেই তো!

মনে নেই তো তার কথা!
ভাবনার সুপ্ত দর্শণের বলি,
আমরা ক’জনে লিখেছি ঐ
স্বাধীনতার গল্প-কবিতা।
কই স্বীকৃতি তো পেলো না,
গাঁয়ের গরু শহরের ভেঁড়া!
আমরা তেমনই গো-পালক,
নেতাশূণ্য চলেছি বহুকাল।

[রচনাকালঃ ১০ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ বেলা ১২:৪২ মিনিট।]

Monday, April 8, 2013

অপমানিত জাতিঃ ছাগু তার নাম



মমতা’র কল্যাণে এদেশে বয়ে যাওয়া একটি নদীর
জল-প্রবাহের গড় উচ্চতা নিশ্চিত করা যায় নি।
কারণ চুক্তিতে বাধ সেধেছে পশ্চিম বঙ্গ নেতা।
দশ ট্রাক কোলাকাতার কাঁচাগোল্লা আর লাড্ডু দিয়ে
পোষ মানানো যায়নি এখানকার জয়ী শাসককে।
সেই কারণেই হয়তো জাগরণে তুষ্টি সে নেতার।
কোলকাতার পেট চুইয়ে যে ঘাম বয়ে যায়,
সেই ঘামে আমার গোছল হয়
সকাল-বিকাল;
এখানে রাম মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের গণ-চানে
পাপ মুক্তি পায়।
কই আমার নেতা তো নির্বাক তখনো -
যখন ফ্যালানি’কে ফিল্মী কায়দায় হত্যা করা হলো,
তারকাঁটায় ঝুলিয়ে ফটো তুলে পাঠানো হলো
সামাজিক রাজনৈতিক প্লাটফরম্ ফেসবুকে!

কই আমার নেতা তো নির্বাক তখনো -
যখন গরু চোরদের বেধড়ক পিটুনীতে শোরগোল;
ওপারের সংস্কৃতি পাড়ায় লাল-সবুজের পতাকা মঞ্চে
যখন লাথি মেরে নৃত্য পরিবেশন করা হয় -
কই আমার নেতা তো নির্বাক তখনো!
যায়নি শোধরানো খুনের বদলে খুনের ধমক,
তার চোখ রাঙানো, আঙুল নাচানো -
কি দিলে হে নেতা জনতাকে? আমতা তথ্য আর
বিষ নিংড়ানো ভাষণে
গরীবের পেটে চড়া দামের ভাত কি হজম হয়!
ওরা সমাজে বিভেদ ডেকেই চলেছে, ঐক্য কবে হবে?

[রচনাকালঃ ৮ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৭:৫৯ মিনিট।]

Sunday, April 7, 2013

দেশ ভাগ


আঙুলের চারপাশের লাল রক্ত
ছোপ ছোপ জমাট দাগ
বিভেদ বৈষম্যে সমাজ ভেঙেছে
মতভেদে দু’টুকরো আলেয়া’রা।
মমতারা ছেড়েছে মাটির ঘর,
উঠোনের ডালিম গাছটি নেই
আগের জায়গায়।
নেই গন্ধরাজ ফুলের গাছটিও।
বদলে গেছে গোলাকার পৃখিবী,
অপরিশোধিত সিসার ব্যাঙ্গচিত্রে
যখেষ্ট ক্ষোভ।
শশ্মানের বিষ্ণু ভুত হয়েছে,
বকে চলেছে জাগরণের মঞ্চে;
অস্ত্র হাতে জনতার ঘাড়ে
সওয়ার হয়েছে দাবীনামা।
এক দফা পানসে গাঞ্জার টানে
মানচিত্র ছেঁড়ার উপক্রম,
সন্ত্রাসীদের ছুরিতে জীবন যায়,
হায় -
কে করেছে আমার দেশ দু’ভাগ?
তুমি, আমরা এবং আমরা সবাই।
সমাজের মেরুদন্ড মজবুত
হোক চাওনি তো সম্প্রদায়!
লুটিয়ে পড়া নির্জিব মানবতা,
ধ্বংসের নেশায় মত্ত বাহুবল।
আসো হাতের রক্ত মুছে ফেলি।

[রচনাকালঃ ৭ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:২০ মিনিট।]

Saturday, April 6, 2013

শান্তি আসুক জনে



অশান্তির মাঝেও উঁকি দেয় শান্তি,
যদি ধরতে পারি তাতেই
আছে মুক্তি।
আশেপাশে যা আছে
সামনে পিছে
চোখের আড়ালে
কোন আবডালে।

ওরে পাগলা দরজা খুলে রেখেছিস কেন?
হাত ধর।
তুলে নে বুকে।
শক্ত পাতায় তুলো দেয়া বিছানায়
ঘুমোতে দে।
সবুজ সংকেত প্রকৃতি পাড়ায় হট্টগোল
হৈচৈ যোগে সাধু সাজা বক্তৃতায়
আমার গা চুলকায়।
চুলকানি ছড়ায়।

ওরে ধনবান-শয়তান দুটি সাদা কথা বল।
কালো মুখে ভেংচি দিয়ে রক্ত চুষে
সভ্যতা নষ্ট করে লাভ কি!
হত-দরিদ্র বংশনাশে বেদনা অনেক।
একাত্তর কেটে দু’হাজার তেরো এলো;
তোদের ভাগ্য কি বদলে দিলো শাসক?

মৃত্যু দূতের আরো একটা ছোবল আছে
যারা বকুল তলায় শান্তি খুঁজতে যায়
রক্তমাখা জামায়
আর অশান্ত কষ্ট-বেদনায়;
শাসক তুমি শান্ত হবে কবে?
বুকে তুলে নিয়ে একটু শান্তি দে।
ঐ শাসক যন্ত্র-
আমাকে খুন করে তোর নৃত্যে
কি আনন্দ সুখ!
বল কিসের আনন্দ খুঁজিস।
বল.. বল.. বল..!
মুখোশ পরা অগ্নিগোলক ধেয়ে আসছে।
ধেয়ে আসছে পুড়িয়ে জঞ্জাল,
অষ্টাদশী’র কালো কেশ যেন না পোড়ে।
সাবধান, সাবধান এবং সাবধান সরকার।

[রচনাকালঃ ৬ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:৩৯ মিনিট।]

লং মার্চঃ শ্লোগান


তোরা লেখ না আবার দেশের গান।
লেখ না বোধের - দশের গান
কৃষকের ঘরে পাকা ধান
শহীদের শতো বলিদান।

লেখ না আবার সাম্যের গান
উস্কানি ছেড়ে প্রাণের টান
জনতারা আজও মহিয়ান
মুক্তিসেনার জীবনদান।

তোরা লেখ না আবার বাঁচার গান।
সৎ সত্যে বলিয়ান
বঙ্গ বীরের ঐক্যতান
লেখ না তোরা দেশের টান।

[রচনাকালঃ ৬ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১২:৩০ মিনিট।]

Thursday, April 4, 2013

পশু সবাই: তুই রাজাকার... তুই সরকার



শীতাকুন্ড মানেই এক পাল পশুর তামাশা,
বিচিত্র এক খামার বা পশুর আড়ৎ..
দোড়াদড়ি... বলছে সবাই বলুক না।

তুই ‘বাঘ’, তো তুই ‘শিয়াল’।
তুই ‘বিড়াল’, তো তুই ‘কুকুর’।
তুই ‘শূকর’, তো তুই ‘ক্যাঙ্গারু’।
তুই ‘গরু’, তো তুই ‘কেঁচো’।
তুই ‘ছুঁচো’, তো তুই ‘ইঁদুর’।
তুই ‘বাদুড়’, তো তুই ‘ভয়াল’।

আহ্ বড্ডো হাঁপানো তালিকা,
শীতাকুন্ডে আছে এক ঝাঁক মানুষ
বুড়ো, শিশু আর তরুণ প্রজন্ম।
পৃথিবী জুড়ে ছড়ানো ছিটানো তাদের জীব-জন্তুর নাম।
এরই মধ্যে
কেউ আছেন মুক্তিযোদ্ধা তো কেউ আছেন রাজাকার।
কেউ আছেন বিরোধী দল তো কেউ আছেন সরকার।
আহা..বড্ডো তালগোল পাকানো শিং আমার,
                             কারো মাথায় তো কারো পাছায়।

[রচনাকালঃ ৪ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ৮:৪৮ মিনিট।]

Wednesday, April 3, 2013

ভিক্ষা, ভিক্ষুক ও ভিক্ষাবৃত্তি


আল-আমিন তখনো তাকিয়ে ছিলো আমার চোখে,
আমি খুঁজেছিলাম ওর মা’কে যমুনার পথ ধরে;
দেখেছিলাম ঢাকা’র ব্যস্ততায় মিশে যেতে,
এক ভিক্ষুক -
যেন বিপন্ন মনুষ্য জাতীর এক অবহেলার নমুনা।
পকেটে যা ছিলো দিয়েছিলাম সেই পরিবারকে,
তাই-তো চিনেছিলাম ভাগ আর ভগ্নাংশ।
শূণ্য ছিলো বলেই একটা উপসংহার
টানতে পেরেছিলাম সেদিন।
তাই-তো দুই পঙ্গু জীবনকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে
মেপেছিলাম দক্ষ দর্জির মতো।
সৃষ্টিকর্তা যেন জোর করে পূর্ণতা দেননি।
দেননি বিশ্বাসী ছেলেটির দৃষ্টি।
দেননি আল-আমিনের বুদ্ধিমত্তার সুষ্টু বিকাশ;
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী করে গণিতের নামতায়
ভুল করিয়েছেন, ভুল করেছেন উনি।
ভুল করেছেন তাকে ডাক শিখাতে।
উচ্চারণে গান গাইতে।
শিখাতে পারেননি মানুষের মতো চিৎকার
করে, গলা ফাটিয়ে অধিকার আদায় করতে।
সেদিনের কুড়ি টাকাই সম্পর্ক রচনা করলো।
ওরা অনেক দিন হলো কাঁটাবনের মসজিদের সামনে,
সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাস ছাউনির নীচে বসবাস করছে।
ফুটপাতে ঘুমায়।
সাঁঝের কাছে প্রতিদিনের ফেরার মুহূর্তে
দুটি চোখ খোঁজে এই দুই প্রাণকে।একটা দারুণ
যোগাযোগ হয়ে যায় প্রতিদিন চোখে-চোখে।
ওরা আজও ভালো আছে হয়তো খালি পেটে।
মুখে হাসি দেখেছি।
কিন্তু তোমাদের উল্লাস দেখিনি ওদের মাঝে।
বিশ্বাস করবে না, আল-আমিন ছেলেটার বয়স
সাত কি আট, জীবনের মানে জানে না সে!
জানে শুধু জামা-কাপড় পড়া মানুষের দিকে
হাত পাত-তে। ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকতে।
ভাগ্যের হিসেব স্পষ্ট দু’চারানা নয়তো অপারগতা;
“আমি কিছু দিতে পারলে খুশী হতাম,
কিন্তু পারছি না যে। দুঃখিত”
আল-আমিনের মা’ও যে বিকলাঙ্গ-বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী!
যিনি বানালেন তিনিই অপূর্ণতা দিলেন।
কি আশ্চর্য তাই না!
কিন্তু কেন? এটা কি যুতসই কোন বিচার হলো!
আমার বুদ্ধির সীমানায় এটা অবিচার ব্যবস্থা।

উচ্চ আদালতে সৃষ্টিকর্তার এমন উদাসীনতা
আর অবিচারের রায়ের বিরুদ্ধে
আপিল করবো। সেখানে শুনানি হবে।
হবে নতুন রায়। ক্ষতিপূরণ অথবা পুনঃনির্মাণ।
এবং.. আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বিশ্বাসী আল-আমিন
বিচার পাবে। নতুন যোগফল আর গুণে -
বিকাশ পাবে তার প্রতিভা-
একজন পরিপূর্ণ মানুষ হবে সে।
আর বিশ্বাসের মা নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে
সমাজের উচ্চতা মাপবে, পরিপূর্ণ বুদ্ধি বেচে।

আমি সফল প্রয়োগ ঘটালাম এই ভগ্নাংশ পরীক্ষার,
হাত পেতে ছিলাম উঁচু জামা-কাপড়ের দিকে।
অভিজ্ঞতা জমানোর কৌশল বলতে পারো;
বা হতে পারে সৃষ্টিকর্তা আমাকেও অসম্পূর্ণ
করে বানিয়েছেন!
সেই একই বক্তব্য-
“দিন না কিছু? আজকের জন্য অন্ততঃ এই -
দশ, কুড়ি, ত্রিশ বা পঞ্চাশ.... বা হাজার।”
যে জন দেয় তার থাকে দেবার যোগ্যতা,
আর যে অপারগতায় মুখ ফেরায় -
সে অযোগ্য বা অসম্পূর্ণ।
তার জন্যও আপিল করতে হবে উচ্চ আদালতে।
আল-আমিনের মতো মুখ ফেরানো সমাধান না।

[রচনাকালঃ ৩ এপ্রিল ২০১৩, সময়কালঃ রাত ১০:৫৫ মিনিট।]